পৃথিবীর প্রাচীনতম হোটেল
পৃথিবীর প্রাচীনতম হোটেল
বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায়॥
মেফিস্টোফিলিস ফাউস্টকে এক ডাকিনীর কাছে নিয়ে যায়। ডাকিনীর হাতে তৈরি সঞ্জীবনী জল খেয়ে ফাউস্টের বয়স কমে যায়।
(গ্যোটের ফাউস্ট)।
যখন ছবিটা দেখি মনে হচ্ছিল আমাকে কেউ এরকম সঞ্জীবনী জল দিতে পারেন? গ্যোটে এক তরুণের সাথে মাথা নিচু করে কি আলোচনায় মগ্ন । গোল্ডেনার এডেলার যখন হোটেলের লবিতে তখন ছবিটা দেখে মনে হচ্ছিল তিনি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। বয়সটা যদি আমার বেড়ে যেতো তাহলে এখানে (১৩৯০ থেকে ২০১৯ ) বসে আলব্যের কামু, জার্মান কবি হাইনে, জাঁ পল সার্ত্র, মোজার্ট , রাজা ম্যাক্সিমিলিয়ান, নিকালো পাগানিনি কে পৃথিবীর প্রাচীনতম হোটেলে বসে একই ছাদের নিচে দেখে নিতে পারতাম !
অস্ট্রিয়ার ইনসব্রুককে গোল্ডেনার এডেলার হোটেলের লবিতে ছবিটা দেখে আমি চমকে উঠি। ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা এমন একটি হোটেল যার সাথে জড়িয়ে আছে অস্ট্রিয়া ও ইতালি, বিশেষ করে রোমের ইতিহাস। যে কারণেই হোক সবচেয়ে বেশি জার্মানি ও ইতালির উচ্চ শ্রেণীর মানুষেরা পছন্দ করতেন গোল্ডেনের এডেলার হোটেলটিকে ।
হোটেল গোল্ডেন এডেলার |
রাজাদের বিবাহ থেকে অতিথি আপ্যায়ন করা , সবই এই হোটেলকে কেন্দ্র করে। গোল্ডেনার এডেলার রাত্রিযাপন করা একটা ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে । এটি এখন আর হোটেল নয়, দর্শনীয় স্থাপত্য হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার গাইড বুকে এবং গিনেস বুকে নাম তুলে নিয়েছে। পৃথিবীর প্রাচীনতম হোটেলগুলোর মধ্যে গোল্ডেনার এডেলার একটি। পৃথিবীর স্বনামধন্য রাজা থেকে নোবেলজয়ী মানুষরা রাত্রিযাপন করে গেছেন । এই হোটেলে আমি দুবার গেছি, কিন্তু রাত্রিযাপন করা হয়নি। আমাদের এখানে রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ , রামকৃষ্ণের মত মানুষ যদি কোন হোটেলে গিয়ে উঠতেন , তাহলে ভারতে সেটা একটা তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠতো । অস্ট্রিয়ার মানুষও ভাবেন এই হোটেলটি তাদের কাছে তীর্থক্ষেত্র।
অস্ট্রিয়ার পশ্চিমদিকে টাইরোলের রাজধানী ইনসব্রুক। আল্পসের মাথায় সাদা বরফ, সামনে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ইন নদী, নীল ঝকঝকে আকাশ। শীতের হাওয়ায় সোনালী রোদ, শহরটা ঝলমল করছে। রোদ এসে গোল্ডেনেস ড্যাচলের ব্যালকনিতে পড়ে সারা শহরটাকে সোনালী করে রেখেছে।
সোনালী ছাদ |
রাজা, রাজকাহিনি,স্থাপত্য ,হোটেল,ভাস্কর্যে মোড়া এই ইনসব্রুক। রোম থেকে লিচেনস্টাইন , জার্মান, ফ্রান্স সুইজারল্যান্ড , যেখানেই যাও না কেন , এই শহরের ইন নদী পেরিয়েই যেতে হবে। ইটালি থেকে বা জার্মানি থেকে যাওয়া আসার সময় রাতে এমন একটা জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে যেখানে ঘোড়াদের খাদ্য মিলবে এবং জল মিলবে। সব দিক থেকে বিচার করলে টাইরোলের রাজধানী ইনসব্রুকই সেরা শহরটা। ভ্রমণ পিপাসু মানুষজনের সমাগমও বাড়তে থাকে। ১১০০ সাল থেকে ছোট ছোট ধাবা থেকে থাকার জায়গা অর্থাৎ হোটেল গড়ে উঠলো। রোমের রাজা সম্রাট ম্যাক্সিমিলিয়ন (এক) এই শহর দেখে, ঠিক করলেন এখানেই তার দ্বিতীয় বিবাহ করবেন। ১৪৯৪ সালে ম্যাক্সিমিলিয়ন রাজবাড়ি বানানোর জন্য ডেকে পাঠালেন স্থাপত্যবিদদের। রাজবাড়িকে (গোল্ডেনেস ড্যাচকে) একটি রাজকীয় বাক্স হিসাবে পরিবেশন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। বাড়িটা এমন হবে যেখানে সম্রাট এবং তাঁর পরিষদবর্গ, রাষ্ট্রপতি রাজ্যে বসে উৎসব বিভিন্ন টুর্নামেন্ট এবং নীচের স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত অন্যান্য ইনসব্রুকে অনুষ্ঠানগুলি উপভোগ করতে পারেন । সেই রাজবাড়ীতে রানীর জন্য বিশেষ করে তৈরি হল একটি বিখ্যাত ব্যালকনি। ২৬৫৭ টি তামার টাইলস এর উপর সোনার জল দিয়ে দিয়ে "সোনার ছাদ'' বানানো হলো । কেন না ডিউক অফ মিলামের বড় মেয়ে বিয়ানকা মারিয়া সোফোরজারকে বিয়ে করতে চলেছেন ।
চারিপাশে আল্পস পর্বতমালা |
এই সোনার ছাদ দেখার জন্য মানুষ ছুটে আসেন। ইনসব্রুকে । সেই ঘরের ভেতরে রয়েছে নানা ধরণের চিত্রকলা । বলিউড অভিনেতা সলমান খান এবং ক্যাটরিনা কাইফ গোল্ডেনস ড্যাচেলের ভেতরে একটি রোমান্টিক গানের শুটিংয়ের অংশ হিসাবে ছিলেন “দিল দিয়ান গ্যালান”।
যে সমস্ত মহান ব্যক্তিরা এই হোটেলে উঠেছিলেন তাদের নামের লিস্ট |
সম্রাট ম্যাক্সিমিলিয়নের (এক) বিয়েতে প্রচুর রাজ পরিবারের মানুষ এসেছিলেন । তখন তৈরি হয়ে গেছে ইনসব্রুকে দামি রেস্তোরাঁ অটোবুর্গ(Otto burg) ১১৮০ সালে । তৈরি হয়ে গেছে গোল্ডেনার এডেলার (Golden adlar)(১৩৯০),Gasth of Weisses Kreuz ( হোয়াইট ক্রস ইন, লাজফোনস) ১৪৬৫ মতো বিখ্যাত হোটেল। বিয়ের আগেই হোয়াইট ক্রস ইন, লাজফোনস এই হোটেলে গিয়ে রাত্রি যাপন করলেন সম্রাট ম্যাক্সিমিলিয়েন। তারই অনুরোধে ১৪৯৪ সালে পুনর্নির্মাণ করা হলো ক্রস ইন,হোটেলটি । যত পুরনো হোক ক্রস ইন, রাজা , লেখক, শিল্পী , চিত্রকর, বিপ্লবীদের একটা মিলনক্ষেত্র তৈরি হয়ে গেল গোল্ডেনের এল্ডার কে ঘিরে ।
কি ছিলো এই গোল্ডেনের এল্ডার হোটেলে ? কিছুই না। শুধু ছিলো একটা শান্তির পরিবেশ । ইনসব্রুকের গোল্ডেনার অ্যাডলারটি কেবল একটি আরামদায়ক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হোটেল নয়, এটি সুরক্ষিত ঐতিহ্যেময় শহরের অন্যতম সেরা নিদর্শন। কতটা ঐতিহ্য সেই নিয়ে একটা শুনেছিলাম ওখানকার মানুষের কাছে । ১৫৭৩ সাল। সেই সময় টাইরোলের শাসককর্তা আর্ক ডিউক ফারদিনান্দ ( ২)। তিনি ছিলেন ক্রীড়া প্রেমী মানুষ। ইনসব্রুকে সারা বছর লেগে থাকতো নানা ধরনে খেলাধুলা । সেই সময় ডিউক ফারদিনান্দ ( ২) আয়োজন করলেন বন্দুক বাজদের নিয়ে শুটিং প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন দেশ থেকে শ্যুটাররা এসেছিলেন । সেই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্র্হণ কারীদের ( ৬৮০ টা ঘোড়া ও ৪১৩ জন মানুষ) নিয়ে একটা বিরাট ভোজের আয়োজন করেছিলেন গোল্ডেনার এডেলারহোটেলে ।
পাশে রয়েছে আরেকটি পুরনো হোটেল |
রোমের এক রাজ্যের রাজা ছিলেন জোসেফ (২)। তার বোন ছিলেন মেরি অ্যান্টোয়নেটি। ষোড়শ লুই এর সাথে তার বিয়ে হয়েছিল । ফরাসী বিপ্লবের সময়ে রাজতন্ত্রের পতনের আগে ফ্রান্সের শেষ রাজা ষোড়শ লুই। গিলোটিনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার চার মাস আগ পর্যন্ত তাকে নাগরিক লুই ক্যাপেট নামে অভিহিত করা হত। ষোড়শ লুইএর মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী মেরি অ্যান্টোয়নেট দেশের রানী হলেন । রানী হবার কয়েক মাসের মধ্যে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ দিকে চলে যায়। তার প্রধান কারণ ছিল, মানুষের কথা না ভেবে নিজের বিলাসিতা, উৎশৃংখল জীবন-যাপনই তাঁকে সিংহাসনচ্যুত করে ছিলো । শেষ পর্যন্ত রানীকে দেশের জনগণ নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন প্যারিসে । সেই বোনের সাথে জোসেফ (২) দেখা করতে যাচ্ছেন । বুক করলেন গোল্ডেনার এডেলার। নিজের নাম বদল করে । হোটেল কর্মীদের সাথে এমন ভাবে মিশে মজা করেছিলেন তা আছো নাকি ইতিহাস । দিনটা ছিলো ২৯ জুলাই ১৭৭৭ সাল । আরেক রাজার কথা বলি । মধ্যযুগের গ্রীসের প্রথম রাজা অটো ১৮৩২ সালে রাজা হয়েই মানে সিংহাসনে বসার কয়েকদিনের মধ্যেই ভ্রমণ করতে এসেছিলেন এই হোটেলে।
১৭৮৬ সালে জার্মানির বিখ্যাত লেখক নাট্যকার গ্যাটে ইতালি যাবার সময় প্রথম গোল্ডেনার এডেলার হোটেলে এসে থাকলেন । ১৭৯০ সালে গ্যোটে আবার ইতালি যাওয়ার সময় কয়েক দিন গোল্ডেনার এডেলারে এসে উঠলেন শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে । যে রুমটিতে তিনি উঠলেন সেই রুমের গায়ে লেখা আছে শ্রদ্ধা। "গ্যোস্টেস্টউব" ঘরটি টাইরোলিয়ান কবি, চিত্রশিল্পী এবং সুরকারদের জন্য একটি মিলনস্থলে পরিণত হয়েছিল। জার্মানির আরেক বিখ্যাত কবি হাইনে। যাঁর কয়েকটি কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনুবাদ করেছিলেন। বাঙালিরাও হাইনের কবিতার সাথে পরিচিত । ১৮৩২ সালে প্রথম গোল্ডেনার এডেলার রাত্রিযাপন করে গেছেন । রুম নম্বর ৩০২। যতবার এসেছিলেন তিনি ৩০২ রুমেই থাকতেন । তার আগে এসেছিলেন আরো এক জার্মান কবি। জার্মান রোম্যান্টিক কবিতা আন্দোলনের প্রথম দিকের সদস্য , যার সব থেকে বহুল পরিচিত কবিতা ' অ্যাডিলেড' এই কবিতাটি নিয়ে সুর করেছিলেন বিটোফেন । সেই ফ্রিডরিচ ভন ম্যাথিসন ১৭৯৯ ও ১৮০৩ সালে দুবার এই হোটেলে রাত্রিযাপন করেছিলেন । শুনলে অবাক লাগবে দুবার এসেছিলেন এক রাজকুমারীর গাইড হিসাবে । গোল্ডেনার অ্যাডলার এতটাই বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিলেন যে লিওপল্ড মোজার্ট মিলানে থাকাকালীন নিজের এবং তার ছেলে ওল্ফগ্যাংয়ের জন্য একটি ঘর সংরক্ষণ করেছিলেন। ১৮২৮ সালে মন্ত্রমুগ্ধ বেহালার বাদক নিক্কোলি প্যাগানিনী অতিথি ছিলেন গোল্ডেনার এডেলারে । এতো মুগ্ধ হয়েছিলেন এই হোটেলে এসে যে নিজের ঘরের জানালার কাঠে তিনি নিজের নামটিও স্ক্র্যাচ রেখে গেলেন । সেই ঘরে এখনো জানালার কাঠে তাঁর নাম রয়ে গেছে ।
হোটেলের প্রবেশপথ |
যে সমস্ত মহান মানুষরা এই হোটেলে এসেছেন তাদের পুরো সম্মান দেওয়ার জন্য, তাদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এখনো পর্যন্ত হোটেল মালিকরা কোনো কার্পণ্য বোধ করেননি । দেয়ালে তাদের ছবি, তাদের নাম তালিকা ফলকে লিখে রেখেছেন । শুধু তাইই নয় তাদের রেষ্টুরেন্টগুলো এই মানুষ গুলোর নাম অনুসারে রাখা। ১৬৮৯ সাল থেকে নিদার কিরঞ্চনার পরিবার ৬ প্রজন্ম ধরে গোল্ডেনার এডেলার চালিয়ে এসেছেন । এর পর কয়েক বার হোটেল হাত বদল হয়েছে । ২০০৪ সাল থেকে জে হ্যাকেল হোটেলটির মালিক । হোটেলের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য হোটেলের কোন কর্মীর বা ম্যানেজারের দেয়ালে একটা পেরেক লাগানোরও অধিকার নেই।
পঞ্চম বার নেপোলিয়ানের আক্রমণ ইউরোপের অস্ট্রিয়াতে । সেই সময় টাইরোলের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আন্দ্রেয়াস হফার। হফার লুকিয়ে এসে থাকতেন গোল্ডেনার এডেলার হোটেলে।
১৮০৯ সালে টাইরলের স্বাধীনতার লড়াইয়েও গোল্ডেনার অ্যাডলার একটা বড় ভূমিকা ছিলো । ১৮০৯ সালের ১৫ আগস্ট নেপোলিয়োনীর বিরুদ্ধে জয়ের পরে অ্যাডলারের প্রথম তলা থেকে টাইরোলিয়ান জনগণের নায়ক আন্দ্রেয়াস হফার তার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলেছিলেন। হোটেলের বাইরের দেয়ালে আন্দ্রেয়াস হফারের স্মৃতিফলক লাগানো রয়েছে। এ হোটেলের পাশে রয়েছে আlন্দ্রেয়াস হফার ও তাঁর ছেলের ভাস্কর্য।
বিখ্যাত মানুষ যাঁরা এসেছিলেন অনেকর নাম আমি বুঝতে পারিনি কেননা সব জায়গায় জার্মান ভাষায় লেখা তার মধ্য যাঁদের নাম শুনে শুনে কিছুটা পরিচিত তারা হলেন : বিখ্যাত গায়িকা মারিয়া ভোন ট্র্যাপ ১৯৫৮ সালে দুবার এসেছিলেন । ১৯৬৯ সালে অটো ভন হ্যাবসবার্গ , সেই বছরে এসেছিলেন মহাকাশ চারি জন গ্লেন । মিথ অব সিসিফাস , প্লেগ, লেখক নোবেল জয়ী আলব্যের কামু এসেছিলেন ১৯৫২ সালে । দার্শনিক জাঁ পল সার্ত্র ১৯৭২ সালে। জানি না সার্ত্রর সাথে সিমন দ্য বোভোয়ার ছিলেন কিনা। বেলজিয়ামের রাজা লেওপল্ড তৃতীয়, ১৯৭৬ সালে ও নরওয়ের ক্রাউন প্রিন্স হারাল্ড । নরওয়ের রাজকন্যা সোনজা ১৯৭৮ সালে, নেদারল্যান্ডসের রানী জুলিয়ানি ১৯৮৪ সালে সুইডেনের রানী সিলভিয়া।
আপনার প্রতিটি লেখাই খুব সুন্দর।
উত্তরমুছুনঅনেক অনেক ধন্যবাদ
মুছুনVerh nice.Really amaizing
উত্তরমুছুনthanks
মুছুনVery informative writings.
উত্তরমুছুনthanks
মুছুনঘোড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুরপড়াশোনাও কোরেছো অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য
উত্তরমুছুনthank you very much
মুছুনthank you very much
মুছুনDarun picture
উত্তরমুছুনদারুণ
মুছুনVery nice picture and writing
উত্তরমুছুনআপনি খুব ভালো লেখেন।আপনার চিন্তাধারা,ভাবনা,সবকিছুই যেন ঈশ্বরতুল্য
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুনখুব দামি লেখা
উত্তরমুছুন