ইতালির কলোসিয়াম
ইতালির কলোসিয়াম
বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায় ।
রোমের যে রাস্তায় আমি দাঁড়িয়ে আছি তার নাম পিয়াজা ভেনিজিয়া এটাই রোমের মেন জংশন । পাশে সেন্ট মার্কের গির্জা, পেছনে প্যালাজো ভেনিজিয়া,রোমের প্রথম রাজা ভিক্টর ইমমানুয়েল দ্বিতীয় স্মৃতির উদ্দেশ্যে রয়েছে বিরাট স্মৃতিভবন যার স্থাপত্যের ধরনটা টাইপরাইটারের মত । পাশের রাস্তা সোজা চলে গেলে হচ্ছে কলোসিয়াম। ডানদিকে ইন্সুরেন্স ভবন। ইন্সুরেন্স ভবন এর উল্টো দিকে রয়েছে মুসোলিনির বাড়ি। পৃথিবীর সব রাস্তায় নাকি এখানে এসে মিশেছে । একাই হেঁটে হেঁটে কলোসিয়ামের দিকে ঘুরছিলাম। খালি মনে পড়ছে নবম-দশম শ্রেণীতে পড়া রোম সাম্রাজ্যের পতনের কারণ কি? পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে নিরোর লেক। এখন এক ধ্বংসাবশেষ, উঁচু উঁচু কিছু থাম আর অনেক দেওয়ালের ধ্বংসাবশেষ। রোমে আমার মনে হয় ইতিহাসের উপস্থিতির চেয়েও অনুভব বেশী। রোমান সাম্রাজ্যের অহং, উত্থান ও পতন, সৃষ্টি ও ধ্বংসের যা কিছু নিদর্শন সবই এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মানুষের শক্তির চেয়েও বেশী মহা শক্তিমান কালের শক্তি অনুভূত হয় রোমে।
কনস্ট্যান্টাইনের তোরণ |
রোম যেমন একদিনে তৈরি হয়নি তেমনি রোম একদিনে দেখা অসম্ভব। বিখ্যাত কলোসিয়ামের (Colosseum) ধ্বংসাবশেষের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে যেন শুনতে পাচ্ছি সিংহের গর্জন, গ্ল্যাডিয়েটরের হুঙ্কার। কান পেতে শুনতে চাইছিলাম ঐতিহাসিক চরিত্রদের নিঃশ্বাসের শব্দ, ফিস ফাস, ঘোড়ার খুড়ের আওয়াজ। আজকের ইতিহাস বই এর পাতায় লেখা আছে : 'কলোসিয়াম ইতালির রোম শহরে অবস্থিত একটি বৃহৎ উপবৃত্তাকার ছাদবিহীন মঞ্চ। ৫০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই মঞ্চ সাধারণত গ্ল্যাডিয়েটরদের প্রতিযোগিতা এবং জনসাধারণের উদ্দেশ্যে কোন প্রদর্শনীর জন্য ব্যবহৃত হত। এর অবস্থান রোমান ফোরামের ঠিক পশ্চিমে, যার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ৭০ থেকে ৭২ খ্রিষ্টাব্দের মাঝে কোন এক সময়; এসময় সম্রাট ভেসপাসিয়ানের রাজত্ব ছিল। রোমান সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বড় এই স্থাপনার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল ৮০ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট তিতুসের রাজত্বকালে। পরে দোমিতিয়ানের শাসনামলে এটির আরও পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হয়। এর আদি নাম ছিল ফ্ল্যাভিয়ান নাট্যশালা। ভূমিকম্প এবং অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এটির পুননির্মাণ ও পরিবর্তন সাধন করা হয়। পরবর্তী শতকগুলোতে কলোসিয়াম অবহেলা, ভূমিকম্প ও এর নির্মাতাদের দ্বারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর বহির্তোরণের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এখনও টিকে আছে।'
রোমান সাম্রাজ্যের নিষ্ঠুরতার চরম উদাহরণ হল কলোসিয়াম। হাজার হাজার মানুষের রক্ত, আর্তনাদ ও সংশয় নিয়ে এটি দাঁড়িয়ে আছে।
গ্ল্যাডিয়েটর বা মল্লযোদ্ধা অথবা ক্রীতদাস কিংবা সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী বা যুদ্ধবন্দীর সামনে ছেড়ে দেওয়া হতো ক্ষুধার্ত হিংস্র পশু। এরপর সেই ক্ষুধার্ত হিংস্র পশুর সঙ্গে চলতো মানুষের অসম লড়াই। পশুর সঙ্গে পশুর লড়াইও ছিল উপভোগ্য বিষয়। মানুষের সঙ্গে মানুষের লড়াইয়ে অস্ত্রধারী গ্ল্যাডিয়েটরগণ পরস্পর যুদ্ধে প্রবৃত্ত হতো এবং এদের মধ্যে একজন সাংঘাতিক ভাবে আহত বা মৃত্যুমুখে না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হতো। সংগ্রামে অসমর্থ আহত গ্ল্যাডিয়েটর হাত তুলে সম্রাটের নিকট প্রাণ ভিক্ষা চাইলে সম্রাট বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ উপরে উঠালে ক্ষমা এবং নিচের দিকে নামালে সেই ব্যক্তির মৃত্যু অবধারিত ছিল। রঙ্গমঞ্চে বসে থাকা প্রায় পঞ্চাশ হাজার দর্শক সহ উপস্থিত রোম সম্রাট অমানুষিক উল্লাসে এই পাশবিক ক্রীড়া উপভোগ করতেন।
কলোসিয়াম |
আজ আমি রোম নিয়ে লিখবো না । রোম থেকে সংগ্রহ করা কলোসিয়াম নিয়ে বলবো । এক বাংলাদেশি মানুষ আমার কাছে এসে বল্লেন মামু পানি নিবেন ? আমি জলের বোতল নিলাম ৩ ইউরো দিয়ে । গল্প হলো অনেক । এটা সেটা বলতে বলতে বাংলাদেশি মানুষটি তার মোবাইল থেকে আমায় কিছু তথ্য দিয়েছিলেন কলোসিয়াম নিয়ে । প্রথমে বলছিলেন । আমি বললাম আমি এতো মনে রাখতে পরবো না । তুমি বলো আমি লিখে নি । বল্লেন কত লিখবেন , আপনারে আমি দিতাসি বলে লেখা গুলো আমায় পাঠিয়ে দিলেন ।
যাঁর কাছে এই তথ্য পেলাম তাঁর ছবি তুলে রাখলাম না ? পরে বার গিয়ে আমি অনেক তাঁকে খুঁজেছি । পাইনি ।
রোমের কলোসিয়ামেরে প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পের অসাধারণ এই নিদর্শন সম্পর্কে অবাক করা তথ্য!
সম্রাট নেরোর গোল্ডেন হাউজের পাশেই স্থাপন করা হয় কলোসিয়াম যা তৈরি করতে ১০ বছরের মত সময় লেগেছিল। ৮০ খ্রিষ্টাব্দে ক্রীড়াক্ষেত্র হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। বিশেষত, এটি ব্যবহৃত হত গ্ল্যাডিয়েটরদের যুদ্ধের জন্য। কখনও আবার কয়েকদিনের ক্ষুধার্ত পশুর সাথে নির্মম লড়াইয়ে লিপ্ত হতে হতো গ্ল্যাডিয়েটরদের। সে সময়ের রোম সম্রাটদের বিকৃত আনন্দের উৎস ছিল এই কলোসিয়াম।
২. গিনেস রেকর্ড :
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এম্পিথিয়েটার হিসেবে এটি এখনও গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ধরে রেখেছে। যখন অন্যান্য প্রাচীন এম্পিথিয়েটারগুলো কোন উপত্যকায় নির্মান করা হত সেখানে কলোসিয়ামই প্রথম মুক্ত স্থাপত্যকলা।
পিয়াজা ভেনিজিয়া |
কলোসিয়াম এর একপাশে |
৪. দ্রুত বহির্গমন পথ :
গ্রাউন্ড লেভেলে ৮০টি প্রবেশদ্বার ছিল। এর মধ্যে ৭৬টি ছিল সাধারণ দর্শকদের ব্যবহারের জন্য। তারা ভোমিটোরিয়াম দিয়ে আসনে পৌঁছাত। ভোমিটোরিয়াম হচ্ছে লোকজন চলাচলের জন্য ব্যবহৃত পথ যেটা কিনা আসন সারির নীচে বা পিছনের দিকে থাকে। সাধারণ দর্শকরা যেন সহজেই বের হয়ে যেতে পারে তাই এই ভোমিটোরিয়ামের ব্যবস্থা করা হয়। কলোসিয়ামের দর্শকরা অনুষ্ঠান শেষে নিমেষের মধ্যেই এই ভোমিটোরিয়ামগুলোর মধ্য দিয়েই অদৃশ্য হয়ে যেত।
৫. হিংস্র বন্য পশু :
এই এম্পিথিয়েটারের মূল আকর্ষন ছিল গ্ল্যাডিয়েটরদের যুদ্ধ এবং হিংস্র পশুর লড়াই। কখনও কখনও গ্ল্যাডিয়েটরদের ছেড়ে দেওয়া হত হিংস্র ক্ষুধার্ত পশুর সামনে। লড়ায়ের জন্য উত্তর আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমদানি করা হতো হাজারে হাজারে হাতি, গন্ডার, সিংহ, নেকড়ে, ভাল্লুক, বাঘ এমনকি কুমিরও। এই বন্য পশুগুলোকে রাখা হত গ্যালারির নিচে খাঁচায়। মোটা দড়ির সাহায্যে এদেরকে উপরে তোলা হত। এইভাবে একসাথে ১০০টি পশু প্রদর্শন করা যেত।
৬. গ্ল্যাডিয়েটর :
এই গ্ল্যাডিয়েটররা ছিল মূলত দাস এবং যুদ্ধবন্দীরা। গ্ল্যাডিয়েটর স্কুলে সামরিক পদ্ধতিতে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। এই লড়াইয়ে টিকে থাকা একেবারে অসম্ভব ছিল না। একটা প্রদর্শনীতে ১৮ জনের মধ্যে ১৫ জনই বেঁচে থাকতে সক্ষম হত।.
৭. চূড়ান্ত রায় :
প্রতিপক্ষকে নিরস্ত্র করা বা হত্যা করার পর গ্ল্যাডিয়েটর চূড়ান্ত রায়ের জন্য ঘুরে দাঁড়াত সম্রাট বা দর্শকসারির দিকে। সম্রাট থাম্বস আপ করলে গ্ল্যাডিয়েটর রক্ষা পেয়ে যেত যেখানে থাম্বস ডাওন মানে নির্ঘাত মৃত্যু।
৮. হিংস্র পশুর দ্বারা মৃত্যুদন্ড :
অপরাধীদের মৃত্যুদন্ডও দেওয়া হত এই কলোসিয়ামে। কোন প্রকার অস্ত্র ছাড়াই তাদেরকে তুলে দেওয়া হতো হিংস্র পশুর মুখে।
৯. তিন মাসের প্রদর্শনী :
কিছু প্রদর্শনী ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলত। তখন পাঁচ হাজারের মত পশু প্রাণ হারাত এই লড়াইয়ে। নয় হাজার গ্ল্যাডিয়েটর লড়াই করে যেত মৃত্যুর সাথে।
১০. বিধ্বংসী ভূমিকম্প :
৪৪৩ খৃষ্টাব্দে এবং ১৩৪৯ সালে দু’টি ভূমিকম্পে কলোসিয়ামের কাঠামোর দুই তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে যায়। তখন এখানকার ইট পাথর রোমের কিছু চার্চ ও হাসপাতাল তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়।
১১. স্বীকৃতি :
ইউনেস্কো কলোসিয়ামকে ১৯৯০ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলের স্বীকৃতি দেয়। এটি পৃথিবীতে মনুষ্যসৃষ্ট আধুনিক সপ্তাশ্চর্যের একটি বলে নির্বাচিত হয় ২০০৭ সালে।
মুসু লি নি র বাড়ি |
১২. বছরে পাঁচ মিলিয়ন দর্শনার্থী :
প্রতি বছর পাঁচ মিলিয়ন দর্শনার্থী আসেন এই কলোসিয়ামে। প্রতি মাসের প্রথম রবিবার কোন প্রবেশমূল্য নেওয়া হয় না। ট্রেভি ফাউনটেইনের মত কলোসিয়ামের চারপাশও মনোমুগ্ধকর।
ইতালির রাজধানীর রোম-এর কেন্দ্রে অবস্থিত কলোস্যিয়াম, শহরের যেকোনও জায়গা থেকে সহজেই প্রবেশযোগ্য। কলোস্যিয়াম থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দূরে ফ্লুমিসিনো বিমানবন্দরটি অবস্থিত। রোম মেট্রোর, কলোস্যিও-র বি লাইনের ওপর একটি স্টপেজ আছে। এই সৌধটির নিকটে একটি ট্রাম ও দু’টি বাস স্টপেজ রয়েছে।সারা বছর ধরে কলোস্যিয়ামে ভিন্ন ভিন্ন পরিদর্শনের সময় রয়েছে। এটির খোলার সময় হল সকাল ৮:৩০-টা.।
thanks
উত্তরমুছুনVery nice picture and writing
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগল।
উত্তরমুছুনঅনেক অনেক ধন্যবাদ
মুছুনDrun darun
উত্তরমুছুনthanks
মুছুনআপনার প্রতিটি লেখাই আমার কাছে এক সুন্দর উপহার।আজীবন মনের মধ্যে গেথে থাকবে।
উত্তরমুছুনআমার শুভেচ্ছা জানবেন
মুছুনApner lekha porley Amr o ghora hoe jaii. Ato sundor Barnona mon k Ank anondo daii..Ae bhaveii likhe Jan dada..
উত্তরমুছুনঅসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
মুছুনআপনার লেখা গুলো সত্যিই সুন্দর। অনেক কিছু জানতে পারি। ঘরে বসেই বিদেশ ভ্রমণ হয়ে যায়।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ আপনাকে
মুছুনখুব সুন্দর তথ্যবহুল বর্ণনা।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুনঅসাধারণ বামাদা অনেক কিছু জানলাম 🙏
উত্তরমুছুনআপনার লেখা বেশ ভালই লাগে, কলোসিয়াম এর সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পারলাম, বেশ ইতিহাস সমৃদ্ধ লেখা।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
মুছুনখুব ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুনতুমি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালবাসা নিও
মুছুনতথ্য সমৃদ্ধ লেখাটি পুরনো ইতিহাসের স্মৃতি উস্কে দেয়।
উত্তরমুছুনঠিক ই বলেছেন,কলোসিয়াম (লাতিন: Amphitheatrum Flavium, ইতালীয় Anfiteatro Flavio বা Colosseo), ইতালির রোম শহরে অবস্থিত একটি বৃহৎ উপবৃত্তাকার ছাদবিহীন মঞ্চ। ৫০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই মঞ্চ সাধারণত গ্ল্যাডিয়েটরদের প্রতিযোগিতা এবং জনসাধারণের উদ্দেশ্যে কোন প্রদর্শনীর জন্য ব্যবহৃত হত। এর অবস্থান রোমান ফোরামের ঠিক পশ্চিমে, যার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ৭০ থেকে ৭২ খ্রিষ্টাব্দের মাঝে কোন এক সময়; এসময় সম্রাট ভেসপাসিয়ানের রাজত্ব ছিল। রোমান সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বড় এই স্থাপনার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল ৮০ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট তিতুসের রাজত্বকালে। পরে দোমিতিয়ানের শাসনামলে এটির আরও পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হয়।এর আদি নাম ছিল ফ্ল্যাভিয়ান নাট্যশালা। ষষ্ঠ শতকের পূর্বে ভূমিকম্প এবং অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এটির পুননির্মাণ ও পরিবর্তন সাধন করা হয়। পরবর্তী শতকগুলোতে কলোসিয়াম অবহেলা, ভূমিকম্প ও এর নির্মাতাদের দ্বারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর বহির্তোরণের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এখনও টিকে আছে।
প্রাচীন রোম রোমের গ্লোবাল শহরের স্বীকৃতি আছে। ২০১১ সালে, রোম পৃথিবীর ১৮-তম সবচেয়ে বেশি ভ্রমণকারী শহর, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাঝে ৩য়, এবং ইতালির সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটক আকর্ষণ ছিলো।এর ঐতিহাসিক কেন্দ্র বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ইউনেস্কো দ্বারা তালিকাভুক্ত। সৌধ ও জাদুঘর যেমন ভ্যাটিকান জাদুঘর এবং কলোসিয়াম বিশ্বের সর্বাধিক দেখা পর্যটক গন্তব্যস্থলগুলির মধ্যে একটি। রোম ১৯৬০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজন করে এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আসন রয়েছে।
প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের গোলাকৃতি ও বহুতল অ্যাম্ফিথিয়েটার হিসেবে বৃহত্তম এ স্থাপনাকে ক্রীড়ায় ব্যবহার করা হতো। মল্লবীরগণ একে-অপরকে নিঃশেষ করে স্বীয় ক্ষমতা প্রয়োগপূর্বক নিজেকে টিকিয়ে রাখতো। এমনকি হিংস্র জীব-জন্তুর সাথেও লড়তে হতো তাদের। স্থল-নৌযুদ্ধ, পশু শিকারসম্পর্কীয় নাটকও আমন্ত্রিতদর্শকদের মনোরঞ্জনার্থে প্রদর্শন করা হতো। মহিলাদের মল্লযুদ্ধও অনুষ্ঠিত হতো। অনেক সময় রোমান মহিলারা নামকরা মল্লবীরদের প্রেমে পড়ে গৃহত্যাগও করতেন।
প্রাক মধ্যযুগ থেকে কলোসিয়াম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হলেও মাঝে মাঝে আরো কিছু প্রয়োজনে ব্যবহার হয়েছে যেমন আবাসন, প্রশিক্ষন কেন্দ্র, সৈন্যদের অস্থায়ী ব্যারাক, তীর্থযাত্রীদের আবাসন, এমনকি কোন এক পর্যায়ে দুর্গ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। খৃস্টান সমাধি হিসেবে একসময় কেউ কেউ দাবী করেছেন যদিও এর সমর্থনে খুব শক্ত কোন দলীল নেই। তবে ৬ষ্ঠ শতাব্দীর শেষ ভাগে এম্পিথিয়েটার কাঠামোর মধ্যে একটি চ্যাপেলের নির্মান করা হয় বলে পাওয়া যায়। এরেনা বা মঞ্চ অংশটি সমাধি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বসার আসন সমুহের নিচের ভল্টেড ছাদাবৃত স্খানগুলি বসবাস এবং ওয়ার্কশপের কাজে ব্যবহার হতে থাকে এবং ১২ শতাব্দী পর্যন্ত এ ধারা চালু ছিলো বলে পাওয়া যায়। অতপর তখনকার প্রভাবশালী ফ্রাঞ্জিপানি পরিবার কলোসিয়াম কে দখল করে এবং চারদিকে ঘিরে তাদের দুর্গসদৃশ প্রাসাদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে।
অসাধারণ
মুছুনসেই ছোটবেলায় "ছোটদের বিশ্বকোষ" এ পড়েছিলাম, তারপর ইতিহাস বইতে, এবার চাক্ষুষ করলাম, ধন্যবাদ অসাধারণ লেখনীর জন্য।
উত্তরমুছুনঅনেক অনেক ধন্যবাদ
মুছুনDarun Bama kaku...
উত্তরমুছুনধন্যবাদ তোমায়
মুছুনTothyo somriddho lekha,pore besh valo laglo.
উত্তরমুছুনধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই আপনাকে ॥
মুছুনAsadharon lekha, anek kichu janlam, khub sundor hoyeche dada
উত্তরমুছুনঅসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য ।
মুছুনরোমান সভ্যতার এত্তো সুন্দর বর্ণনা বোধ হয় এর আগে পাইনি। তুমি শুধু দেখ না ইতিহাসের গোড়ায় গিয়ে ইতিহাসকে উপড়ে আনো। এটাই তোমার লেখার বৈশিষ্ট্য।
উত্তরমুছুনবেশি প্রসংসা করবো না। আমার অনেক আশীর্বাদ আর শুভেচ্ছা জানাই ।
আপনি আমার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানবেন
উত্তরমুছুনআপনি আমার শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানবেন
উত্তরমুছুনপড়ে বেশ ভালই লাগলো এবার দেখার অপেক্ষায় রইলাম ।
উত্তরমুছুনভালো থাকবেন দাদা ।
THANKS
মুছুনKi sundor likhechen
উত্তরমুছুনKh
উত্তরমুছুনThanks
মুছুনKhub bhalo laglo ei lekha pore . Sotti anek kichhu jana galo .
উত্তরমুছুনঅনেক অনেক ধন্যবাদ
মুছুনদারুন লেখা। এরকম লেখা বারবার করতে ইচ্ছে করে। আরো লিখুন আমরা পড়বো।
উত্তরমুছুনআপনি আমার ভালোবাসা নেবেন
মুছুনআপনার সাথে আমাদের ও রোম ভ্রমণ হয়ে গেল।ভূমিকম্পে ধংস হয়ে ভালো হয়েছে।অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা হয়েছে।
উত্তরমুছুনঅনেক অনেক শুভেচ্ছা।
মুছুন