আন্দামান ভ্রমণ

 

সেলুলার জেল


   ॥ আন্দামানের_নীল_কথা॥ 

 ॥ বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায়॥ 

              গুরুর কাছেই শিক্ষা ভূগোলে পড়া বিদ্যে । পৃথিবীর তিন ভাগ জল. আর একভাগ স্থল । জীবনের তিন ভাগ দুঃখ, আর একভাগ সুখ । এই কথাটা সমরেশ বসুকে কুম্ভের এক সাধুবাবা বলেছিলেন । সমরেশ বাবু এই কথাগুলো তাঁর  লেখায়, ব্যক্তিগত আড্ডায় বহু বার বলেছেন । এই নিয়মই আমার জীবনের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে । 

                 নব্বইদশকের শেষের দিকে প্রথম কলকাতা থেকে জাহাজে করে আন্দামান এসেছিলাম ।  সে এক চরম অভিজ্ঞতা। সে অভিজ্ঞতার কথা অন্য সময় বলবো । তবে বলতে হয় সে বড় সুখের সময় নয় সে বড় দুংখের সময় । ভালো লাগার ছোট মুহূর্তের  মধ্যে ছিলো  জাহাজের পেছনে পেছনে আসা  অসংখ্য সিগাল.বড় বড় সার্ক আর জলে উড়ে বেড়াচ্ছিল উরুক্কমাছ । তিনদিন জলে ভাসতে ভাসতে যখন আন্দামানে এসে পৌঁছেছিলাম, জলের প্রতি এক অদ্ভুত ঘৃনা জন্মে ছিল। সুখ আর দুঃখকে ভাগ করতে পারছিলাম না । ভেবেছিলাম আমিও সেই কয়েদী যে সেলুলার জেলে বন্দি হতে এসেছি । কেন না ঘন্টা বাজিয়ে জাহাজের ক্যাপ্টেন যখন খাবার হয়ে গেছে ঘোষণা করতেন,  দেখতাম লাইন দিয়ে থালা বাটি নিয়ে সবাই   দাঁড়িয়ে থাকতো খাবার টেবিলে । জাহাজে সব চেয়ে বেশি চাহিদা ছিলো মুড়ি আর বিড়ি । তারপর কাঁচা লঙ্কা আর পেঁয়াজ । আমি জাহাজের এই খাবারের সাথে নিজেকে মেলাতে পারিনি । আমি থালা বাটিও নিয়ে যাইনি । তিনদিন এক গুমরে থাকা কষ্টের ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলাম।  ' নিকোবর' জাহাজটি তখন মায়া বন্দরে হয়ে যেতো । মাল পত্তর নামবে,  যাত্রী নামবে মায়া বন্দরে।  জাহাজের ক্যাপ্টেনকে বলে নেমে আমিও পড়েছিলাম মায়া বন্দরে । সে দিন অনুভব করে ছিলাম পায়ের তলায় মাটি না থাকলে কী হয় । দু ঘন্টা ছুটি পেয়ে মায়া বন্দরও একচক্কর  ঘুরে নিয়ে ছিলাম । জীবনে সেটাই  ছিলো মুক্তির  সেরা ভ্রমণ । কালাপানির কপালে কেউ জয় তিলক এঁকে দেয় নি । জীবনের তিন ভাগ দুঃখ আর এক ভাগ সুখ।


              চারদিনের সফরে যেটুকু দেখেছিলাম , তা ভালো করে মনে রাখতে চাইনি । তার একটা কারণও ছিল । সেই সময় আমার পাহাড় প্রীতি  ছিল এতো প্রবল , সমুদ্র আমার ভালো লাগতো না । (এখনও যে প্রীতি নেই  তেমন নয় ) তখন নীলে কেউ যেত না । হ্যাভলক যাওয়াটাও খু্ব মুশকিল ছিলো । আবার ফিরে আসা  তিন ভাগ দুঃখ আর এক ভাগ সুখের মতোই  ।  

     আকাশ পথে প্রথম আন্দামানকে দেখলাম ২০০৭ তে । সে বড় সুখের সময় । জাহাজের ভাড়াতেই বিমান যাত্রা । । তখনও বিমান ছিলো আমার কাছে বেশ আনন্দের, টেনশনের । জানালার ধারে একটা সিট পেলে ভাবতাম লটারি পেয়েছি । সে ছিল এক বিষ্ময়। বঙ্গোপসাগর দেখতে দেখতে বিমান চলেছে আন্দামানের দিকে ।আন্দামান যেহেতু  পর্যটক স্থান তাই বিমানের চালকও  পোর্টব্লেয়ার নামার আগে এক চক্কর ঘুরিয়ে দেন দ্বীপগুলোর ওপর দিয়ে।  বিন্দু বিন্দু দ্বীপ গুলো যখন চোখের সামনে ভেসে আসছে.তখন ভেবেছি : রাতের সব তারাই থাকে দিনের আলোর গভীরে। নীলের ভেতরে সবুজ বিন্দু । এ একমাত্র ভারতবর্ষেই সম্ভব । রাজনৈতিক পট ভূমিকায় অক্টোপাসের সেলুলার জেল  বীর সাভারকার থেকে নেতাজী সুভাষচন্দ্র যে ভাবে অত্যাচারে বিরূদ্ধে নাড়া দিয়েছিলেন তার অন্য ভূমিকা ছিল । বিপ্লবীদের প্রতি ব্রিটিশদের অমানুষিক অত্যাচারের কাহিনী শুনলে রাগে  ঘৃণায় শরীরটা গুলিয়ে ওঠে।  আন্দামান এখন সমস্ত ভারতবাসীর কাছে বীরভূমি । আমি এসেছি প্রকৃতি দেখতে । একভাগ সুখ নিতে ।


          রামচন্দ্র সীতাকে উদ্ধার করতে প্রথমে  ঠিক করে ছিলেন আন্দামান থেকেই লঙ্কা যাবার সেতু তৈরি করবেন । কালা পানি দেখে বানর সেনা ভয় পেয়েছিল না কী আন্দামানের সৌন্দর্য্যেকে অটুট রাখার জন্য রামচন্দ্র মত পরিবর্তন করেছিলেন জানা নেই । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা সবুজ দ্বীপের রাজা পড়া হয়ে গেছে । আমি কোন কিছু খুঁজতে আসিনি । জারোয়া নিয়ে অসাধারণ একটি বই লিখেছেন ডাক্তার রতনচন্দ্র কর । বইটা পড়েছি । বই না বলে বলা যায় একটা ডকুমেন্ট । জারোয়া দেখার জন্য আমার মন কাঁদে না । প্রথমবার যখন যাই তখন আমার সাথে একজন প্রাক্তন সংসদ গিয়েছিলেন । তিনি অনেক কিছু কিনে মূলত খাবার  নিয়ে গিয়েছিলেন জারোয়া দের জন্য । তখন জারোয়াদের  দেখা পাওয়া মুসকিল ছিলো । এখন যেমন গেলেই দেখা যায় । তখন অপেক্ষার ফসল । 

                ভাবনার ভেতরেও ভাবনা বাসকরে । চিন্তার ভেতরে মগ্নতা আর মগ্নতার ভেতরে সাবকনসাস মনটায়  নীলপরীর উড়ে আসা ওড়নাটা জড়িয়ে যায় বুকের ভেতরে।কখন যে আন্দামানকে ভালোবেসে ফেলেছি নিজেরও মনে নেই । নীল দ্বীপটা ভাঙা আতস কাঁচে জড়িয়ে থাকা একটুকরো লেগুন । যে  নাবিক হারিয়েছে দিশা সে যদি একবার এখানে আসেন সে আর কোন দিন জাহাজ খুঁজে বেড়াবে না । নীলের মধ্যে নীল । আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীলকে আলাদা করা সম্ভব নয় । জলের নিচে প্রবাল হেঁটে বেড়াচ্ছে । এ কোথায় এলাম  জলের ভেতরে আমি ,  না কী  আমার  ভেতরে জল !


আশ্চর্য্য রূপ কথার বাঁশিওলা আমায়  টেনে নিয়ে যায় ভারতপুরের তীরে । একপশলা বৃষ্টির পর   দিগন্তজোড়া রামধনু।  জাহাজের ডেকের সামনে  দাঁড়িয়ে  কালাপানিতে  উড়তে আর ডুব দিতে থাকা উড়ুক্কু মাছের দল। জাহাজ থেকে নেমে জেটি দিয়ে হেঁটে আসতে আসতেই আপনি দেখতে পাবেন দু-পাশের নয়নাভিরাম দৃশ্য। স্বচ্ছ নীল জলের নীচে কোরালের রাজ্য। খেলে বেড়াচ্ছে মাছের ঝাঁক।  আয়তনের দিক থেকে নীল খুবই ছোট। দ্বীপের সবচেয়ে চওড়া অংশের দৈর্ঘ খুব বেশি হলে পাঁচ কিলোমিটার। লোকসংখ্যা পাঁচ-ছয় হাজারের মধ্যে। আর সবাই বাঙালি । মনে হবে যেন পশ্চিমবঙ্গের কোন এক প্রত্যন্ত গ্রামে চলে এসেছি। ঘরে ঘরে বা দোকানে হাটে-বাজারে এখনো কুপি বা ল্যাম্প জ্বলে । বাজারে লাউয়ের ডাটা কুমড়ো ফুল এখনো বিক্রি হয়। দ্বীপজুড়ে রয়েছে নানান ধরণের গাছগাছালি। নারকেল, সুপুরি থেকে শুরু করে আম, জাম, কাঁঠাল গাছও রয়েছে। গাছগাছালির বৈচিত্রের জন্যে নীল আইল্যান্ডকে বলা হয় আন্দামানের ‘সবজির পাত্র’ বা ‘ভেজিটেবল বোল’।  তটভূমি বরাবর সার বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে স্পিডবোট, গ্লাস-বটম বোট, ওয়াটার স্কুটার। জলপরীরা যেনো উড়ে যাচ্ছে ।  নীল আইল্যান্ডের লক্ষ্মণপুর বিচকে বলা হয়  হাওড়া সেতু  । পাথরের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা প্রায় সেতুর মতো দেখতে একটা গড়ন । এখানে স্থানীয়ভাবে হাওড়া ব্রিজ নামে পরিচিত। কোরাল রিফ দিয়ে গড়ে ওঠা এই  ব্রিজ ।  কোরাল রিফের ওপর ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে কতো কিছু যে দেখি  সি কিউকাম্বার, সি আর্চিন, নিয়ন টেট্রা, বার্ব, সামুদ্রিক শঙ্খ, স্টার ফিশ, স্পাইডার ক্র্যাব, ফিঙ্গার কোরাল, স্পঞ্জ কোরাল, জ্যাকফ্রুট কোরাল, রঙ বদল করা ফ্লাওয়ার কোরাল ও আরও অনেক কিছু।  তবে হ্যাঁ জোয়ার ভাটার ওপরই সবকিছু নির্ভর করে আসা-যাওয়া টা এই বীচে । মজার একটা কথা বলি লক্ষ্মণপুর যাবার মুখে একটা দোকান আছে ডাব থেকে শুরু করে চা কফি গেঞ্জি  সব পাওয়া যায় । ১৫ কাটা জমির উপর বাড়ি । সারা জমিতে নানা ফলের গাছ । একবার একটা পিয়ারা গাছ থেকে পেড়ে ছিলাম । ভদ্র মহিলা আমায় যা গলাগলি করে  ছিলো সেটা আজ মনে আছে । নিজেরই খারাপ লেগেছিল  এটা বিক্রি করলে তার হয়ত কিছুটা কাজে আসে । আমি দাম দিয়ে দিয়েছিলাম । বারবার আসার জন্য উনি আমায় চিনে গেছেন । পরে জানতে পারি ওনার এক ছেলে চেন্নাইতে নাম করা ডাক্তার । পয়সার কোন অভাব নেই । এখন গেলে বিনা পয়সায় আম খেতে বলেন । 


      ভারতপুর বিচকে কী ভাবে বর্ণনা করলে । কী ভাষায় বল্লে তাকে আঁকা যাবে আমি জানি না । ছবি তুলে ক্যামেরা বন্দী করে না কী তুলি দিয়ে এঁকে । ভাবি এর জন্য আরো  কয়েকশ বার অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর পড়া দরকার। তিনি তো ছবি লেখেন । ছবি আঁকেন না । আমি তো কোনটাই জানি না । সারা জীবন তিন ভাগ জল নিয়েই বেঁচে থাকলাম । নীলদ্বীপে এসে একভাগ সুখ আমি পেয়েছি । আর তাকে প্রকাশ করতে গিয়ে নানা চতুরতার আশ্রয় নিচ্ছি। ভাবি লোকে বলুক না কি আছে মূর্খ বড়ো সামাজিক নয়। বালির বিছানায় ওপরে শুয়ে মনে হয় যেন রাজ সিংহাসনে শুয়ে আছি। নীল প্লাস্টিকের একটা তিরপল এনে আমাদের বলা হলো এখানে বসুন । আমি বসি না শুয়ে পড়ি । আমি স্বপ্ন দেখি না জেগে থাকি জানি না । মনে হয় মাথার উপরে গাছের ফাঁক দিয়ে নীল পরী উড়ে আসবে । সামনে হাঁটুর সমান জল তীর তীর করে বয়ে চলেছে । দূরে অদূরে বড় সমুদ্রের হাত ছানি । নীল জল।  জলের নিচে অসাধারণ সব প্রবাল । নানা রঙের মাছ । যদি ইচ্ছে করলে নৌকা ছাড়াও  চলে যাওয়া যায় । সবাই গ্লাস বটম নৌকা চেপেই সকলেই চলেছেন । আর কেউ কেউ মিশে যেতে চাইছে দিগন্ত ছুঁয়ে থাকা আকাশ সমুদ্রের সাথে। দেখে মনে হবে যেন ওরা আর ফিরে আসতে চায় না মিশে যেতে চায় নীল দিগন্তে । বিদেশে এরকম একটা বিচ থাকলে কমপক্ষে কয়েক হাজার মানুষ ঘিরে থাকতো । বিয়ার পাভ বসিয়ে দিতো । এখানে ডাব আর চা । এটাই তো তার নিজস্বতা । স্পিডবোট, গ্লাস-বটম বোট, ওয়াটার স্কুটার স্কুবা ডাইভিং সব কিছু্ই আছে। আছে তার নীরবতাও। আশ্চর্য ভ্রমণের রূপকথা নয়, এ এক  রূপকথার আশ্চর্য ভ্রমণ। পৃথিবীর এই আশ্চর্য রূপটানের ছোঁয়া নিতে কোথায় না আমরা পৌঁছে যাই। এক ভাগ সুখের কাছে মনে হয় সরাসরি পৌঁছে যাওয়া। 

ভারতপুর.সীতাপুর,লক্ষ্মণপুর বীচ নেই শুধু রামপুর । রামকে খোঁজার জন্য বেড়িয়ে পড়বো অন্য কোন দিগন্তের  দিকে।

মন্তব্যসমূহ

  1. heavenly place.. lekha ta pore abar sei timeline ey fire gelam.. many thanks..

    উত্তরমুছুন
  2. আন্দামানের ভ্রমণের বর্ণনা টি প্রত্যক্ষ ও সঞ্চিত অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। বহুবার বিভিন্ন উপায়ে যাবার সুবাদে , ভ্রমণ বিবরণী প্রাঞ্জল।প্রতিটি স্থানের বিস্তৃত ও ঐতিহাসিক বর্ণনা লেখনীকে রিদ্ধ করেছে। ব্লগার মহাশয়ের মার্জিত ও সমৃদ্ধ বর্ণনা সত্যিই নান্দনিক।

    উত্তরমুছুন
  3. আন্দামান ভ্রমণ আমার এক স্বপ্ন। কবে যেতে পারব জানি না। তোমার সুন্দর লেখায় আপাতত মানসভ্রমণ হল। আশাকরি নিশ্চয়ই কোনও একদিন যেতে পারব এই স্বপ্নের জায়গায়।

    খুব ভালো লাগল বামাদা।

    উত্তরমুছুন
  4. খুব খুব ভালো লাগলো। আমি ঘুরে এসেছি। তাই আমার চোখে র দেখা আর আপনার লেখা মিলে যাচ্ছে।

    উত্তরমুছুন
  5. এখনই নীল দ্বীপে চলে যেতে মন চাইছে।

    উত্তরমুছুন
  6. দারুণ লাগল। আবার যেতে ইচ্ছে করছে।

    উত্তরমুছুন
  7. খুব সুন্দর।
    অনেক কিছু জানতে পারলাম।
    আমি কি এই লেখাটা নিতে পারি

    উত্তরমুছুন
  8. নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি প্রকৃতিকে সাথে প্রকৃতি প্রেমিকদেওর খুব আপন মনে হয়, আপনার অসাধারণ ভ্রমণের বর্ণনার মধ্যে নিজেই হারিয়ে তাই দূর থেকে দূরান্তে, ভালো থাকবেন সবসময় প্রিয়জনদের নিয়ে, আপনার আগামী পথচলা ‌ সার্থক হোক, আপনার প্রতি শুভকামনা সবসময় থাকবে।

    উত্তরমুছুন
  9. বামার দা বাড়ির সবাই কে নিয়ে সুস্থ্য থাকুন এই কামনা করছি।

    উত্তরমুছুন
  10. আপনার সঙ্গে প্রথম ভ্রমণ,এই আন্দামান।নীল মানেই এক স্বপ্ন।সেই স্বপ্ন কে আবার আপনি আরো গভীর স্বপ্নে পরিণত করলেন।

    উত্তরমুছুন
  11. Opurbo bornona Bama da, aapnar sathei Andaman bhromon korechi, aapnar lekhoni te oi oporoop drishyopot abar vese uthlo chokher samne... Aapni khb vlo thakun Bamada, aro lekha porar opekhay roilam.....

    উত্তরমুছুন
  12. Khub sundar barnona karechen. Andaman jabar souvagya hayechilo. Apnar lekhata pare abar natun kare sob dekhlam. Khub bhalo thakben.

    উত্তরমুছুন
  13. লেখনী তে ও বর্রনায় রুপসী আন্দমান ......

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রামায়ণের পথে শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণ

কল্পা কিন্নর হিমাচল প্রদেশ

ইতালির কলোসিয়াম