পোস্টগুলি

মে, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আন্দামান ভ্রমণ

ছবি
     ॥ আন্দামানের_নীল_কথা॥   ॥ বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায়॥                গুরুর কাছেই শিক্ষা ভূগোলে পড়া বিদ্যে । পৃথিবীর তিন ভাগ জল. আর একভাগ স্থল । জীবনের তিন ভাগ দুঃখ, আর একভাগ সুখ । এই কথাটা সমরেশ বসুকে কুম্ভের এক সাধুবাবা বলেছিলেন । সমরেশ বাবু এই কথাগুলো তাঁর  লেখায়, ব্যক্তিগত আড্ডায় বহু বার বলেছেন । এই নিয়মই আমার জীবনের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে ।                   নব্বইদশকের শেষের দিকে প্রথম কলকাতা থেকে জাহাজে করে আন্দামান এসেছিলাম ।  সে এক চরম অভিজ্ঞতা। সে অভিজ্ঞতার কথা অন্য সময় বলবো । তবে বলতে হয় সে বড় সুখের সময় নয় সে বড় দুংখের সময় । ভালো লাগার ছোট মুহূর্তের  মধ্যে ছিলো  জাহাজের পেছনে পেছনে আসা  অসংখ্য সিগাল.বড় বড় সার্ক আর জলে উড়ে বেড়াচ্ছিল উরুক্কমাছ । তিনদিন জলে ভাসতে ভাসতে যখন আন্দামানে এসে পৌঁছেছিলাম, জলের প্রতি এক অদ্ভুত ঘৃনা জন্মে ছিল। সুখ আর দুঃখকে ভাগ করতে পারছিলাম না । ভেবেছিলাম আমিও সেই কয়েদী যে সেলুলার জেলে বন্দি হতে এসেছি । কেন না ঘন্টা বাজিয়ে জাহাজের ক্যাপ্টেন যখন খাবার হয়ে গেছে ঘোষণা করতেন,  দেখতাম লাইন দিয়ে থালা বাটি নিয়ে সবাই   দাঁড়িয়ে থাকতো খাবার টেবিলে । জাহাজে স

করানোর প্রভাবে, আত্ম কথন । হে স্বপ্নময় মাধুবিলতা

ছবি
 হে স্বপ্নময় মাধুবিলতা ॥ বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায়॥ লিখতে ইচ্ছে করে না । কিন্তু ভেতর থেকে লেখা গুলো মাথায় ঘুরপাক খায় । ধোঁয়ার মতো মেঘ গুলো মাথায় চেপে বসে । কোন লাইক বা সুন্দর মন্তব্য শোনার কোন মোহ আমার নেই । আমার লেখা বহু মানুষ পড়েন আবার কেউ ভীষণ অপছন্দ করেন । লেখাটা একদম ব্যাক্তিগত। নিজের জন্যই লিখি । সেটা কারুর ভালো লাগলে আনন্দ পাই । করোনার প্রভাব এমন একটা স্তরে এসে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে স্তব্দ চরাচর । আমি ছোট একটা ভ্রমণ সংস্থা চলাই । চলাই না এখন বলতে হচ্ছে চালাতাম । আজ কতোটা অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে কাউকে বোঝাতে পারবো না , কোন কাজ নেই । কোন কাজের দিশা নেই । কত দিন এভাবে দিন কাটবে জানি না । সারাদিন বসে থাকা  । বই পড়তে পারছি না । লিখতে গেলে মনে হয় কেন লিখছি ?  ফেসবুকে আজ যেটা লিখলাম । কাল কেউ পড়ে না । একদিনের অরণ্যের দিনরাত্রি । পরের দিন সেটা পুরনো । খবরের কাগজের মতো বাসি । আমার কাছে সেটা বাসি নয় । প্রতিটি লেখার মধ্যে আমার ভালোলাগা খারাপ লাগা  জড়িয়ে থাকে । জীবন জুড়ে, জীবন লুকিয়ে থাকে । সবাই বলে আবার ভালো সময় চলে আসবে । গত বছর ২২ মার্চ পর একজন বলেছিলেন : প্রতিটি মানুষের কর্ম জীবন পাল্টে যাবে । য

রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রথম ভ্রমণ বই

ছবি
  শিশুদের প্রথম ভ্রমণ বই  বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায় ।  খু্ব কম বাঙালি আছেন যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজপাঠ পড়েন নি । প্রাথমিক শিক্ষার প্রথম বই হচ্ছে সহজপাঠ। অ  আ  ক খ শেখার জন্য যেমন সহজপাঠ প্রথম বই তেমনি এটাই বাংলায় লেখা শিশুদের জন্য প্রথম ভ্রমণ বই । সহজপাঠের প্রতিটি পাতায় শব্দ দিয়ে আঁকা আছে ভ্রমণ কাহিনী ।   সহজপাঠের প্রথম ভাগে বাংলা বর্ণমালা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা এবং দ্বিতীয় ভাগে বাক্য, শব্দের ব্যবহার সহজ করে শেখানো। সরল ছন্দের মিশ্রণ এবং শৈল্পিক শব্দের বিন্যাসে শৈশবের চমৎকার সূচনা। নন্দলাল বসুর ছবি ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শব্দমালায় সহজপাঠ, অচিরেই হয়ে ওঠে ছোটদের পড়া পড়া খেলা। আমাদের  পড়তে হয়নি সহজ পাঠ । পড়তে হয়েছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের  বর্ণপরিচয়। একটু বড় বয়সে আমি  পড়তে শুরু করি সহজ পাঠ। সহজ পাঠের  আগে আমি পড়ে ফেলেছি রবীন্দ্রনাথের জীবনস্মৃতি । সহজ পাঠ থেকে আমি ছন্দের দুই মাত্রা তিন মাত্রার পার্থক্য বুঝতে শিখেছিলাম । রবীন্দ্রনাথ  ঘুরতে  ভালবাসতেন সারাটা জীবন তিনি দেশ-বিদেশে ঘুরেছেন ।  ঘুরে  এসেছেন ইউরোপ। পুরো দক্ষিণ এশিয়া ঘুরে এলেন ।  রবীন্দ্রনাথ শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরে এসে

জুরিখের ট্রাম গাড়িতে ভ্রমণ

ছবি
  জুরিখের ট্রাম গাড়ি।  বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায়  সুইজারল্যান্ড মানে আল্পসের মাথা আর বরফের চূড়া। এটা একটা মিথ  তৈরি হয়ে গেছে সুইজারল্যান্ডকে নিয়ে।  এর বাইরে ও যে  সুইজারল্যান্ডের আরো একটা পৃথিবী আছে সেটা আমরা দেখতে ভুলে যাই, বা বলতে ভুলে যাই।  বরফের ভেতর ঢুকে যাওয়া আর বাইরে থেকে বড় দেখার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।  এই পার্থক্য আরো ভালোভাবে বুঝলাম যখন আমরা জুরিখে এসে পৌঁছলাম। প্রাচীনতার মধ্যে আধুনিকতাকে ঢুকিয়ে দেওয়ার একটা বড় সাফল্য এসেছে এই জুরিখে। ঝকঝকে নীল আকাশ, দূরে পাহাড় জুড়ে বরফের রেখা আর পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে লিম্যাট নদী। নদী টি শুরু হয়েছে এই জুরিখে থেকেই । রাস্তার আশেপাশে হঠাৎ হঠাৎ চোখে পড়ে দু-একটা টিউলিপ ফুল।  সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীনতম  শহর জুরিখ। এটিই ইউরোপের সেন্ট্রাল পয়েন্ট। সুইজারল্যান্ডের অন্যান্য শহরের মত জুরিখকে একটি ব্যয়বহুল শহর বলা হয় । সেই দেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে সুপরিচিত। ইউরোপের প্রধান শিল্প ও অর্থনৈতিক রাজধানীগুলোর মধ্যে জুরিখ পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আনন্দদায়ক এবং আকর্ষণীয় স্থান। সাংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য এখানে আছে বেশকিছু জাদুঘর

কল্পা কিন্নর হিমাচল প্রদেশ

ছবি
 রূপলোকের_প্রেম_ও_বরফ_যাত্রা॥ বামাপদ গঙ্গোপাধ্যায় । https://www.blogger.com/blog/post/edit/4648867467379144629/7601792051529929973 নেহেরু প্রধানমন্ত্রী হবার পর হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলায় পাঠিয়েছিলেন রাহুল সাংকৃত্যায়নকে । কেন ? না  সে প্রদেশের মানুষের উন্নতি সাধনের জন্য কী কী করা যায় সেটা দেখতে । ফিরে এসে রাহুল সাংকৃত্যায়ন অসাধারণ একটি বই লেখেন কিন্নর দেশে । বইটি পড়ার পর মনে হতো কবে যাবো ? কবে যাবো ? এমনকি ব্যাগ গুছিয়ে ফেলেছিও ভেবে ফেলতাম । প্রথম যে বার গেলাম কষ্টের সীমা-পরিসীমা ছিলোনা । সিমলার লক্কর বাজার থেকে বাস ছাড়বে ভোর বেলা যাবো সাংলা। দিনে দুটো বাস । সেসব কষ্টর কথা আজ শুনতে বেমানান লাগবে ।শুধু একটা কথা বলি সহযাত্রীর বমিকে নিজের গায়ে মেখেই যাত্রা করতে হবে ।  কল্পার পথে    আমার চোখে এসব কিছু নেই । আমার চোখে অনন্ত দেবভূমির একটা প্রতিমা(ইমেজ ) ভেসে বেড়াছে । এই তো সে দেশ , যেখানে দেখা মেলে অনন্ত প্রকৃতির । এইতো সেই দেশ , যেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে পরীর দল নেমে  আসে আপেলের বাগানে ! নৃত্য আর সংগীতে মুখরিত হয়ে ওঠা সুর পাহাড়ের গা দিয়ে বয়ে নেমে আসে নদীর দু'ধারে।  কল্পনা আর বাস্তব যেখা